সিলেটের আবাসিক হোটেলগুলো যেন অনৈতিক কার্যকলাপের স্বর্গরাজ্য। দিন যতই যাচ্ছে এই অপরাধের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে ব্যাপক হারে। প্রশাসনের চোখের সামনে সিলেট শহরে অবস্থানরত আবাসিক হোটেলগুলোতে এমন কার্যকলাপ দিনের পর দিন চলতে থাকলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তেমন কোন জোরালো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায় নি। কয়েক মাস পর পর আবাসিক হোটেল গুলোতে প্রশাসনের অভিযানে ধরা পড়ে নাম পরিচয় গোপন রাখা অসংখ্য প্রেমিক জুটি। সেসব প্রেমিক জুটি নিরাপদে অনৈতিক কার্যকলাপের জন্য বেচে নেন এসব আবাসিক হোটেল গুলোকে। কিন্তু অদৃশ্য কারণে হোটেল কর্তৃপক্ষের কোন শাস্তির মুখে পড়তে হয় না। এই সুযোগে আবাসিক হোটেলগুলো তাদের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে দেদারসে।
প্রাপ্ত সূত্রে জানা যায় সমস্যাটা অনেক পুরানো। সিলেট মহানগরীর আবাসিক হোটেলগুলোতে অনৈতিক কার্যকলাপ চলছে যুগের পর যুগ ধরে। ইদানিং তা আরও বাড়ছে। গত ৪দিনে ৪টি আবাসিক হোটেল ও গেষ্টহাউজে অভিযান চালিয়ে মোট ১৪ জন নারী-পুরুষকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাদের মধ্যে পুরুষ ৮জন ও মহিলা ৬জন। আটককৃতদের মধ্যে একজন একটি গেষ্ট হাউজের ম্যানেজার।
গত বৃহস্পতিবার সিলেট মহানগরীর কোতোয়ালী থানা এলাকার একটি গেস্ট হাউজে অভিযান চালায় মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।
গেস্ট হাউজের নাম তালহা গেস্ট হাউজ। অভিযানের সময় এর দুটি কক্ষ থেকে অনৈতিক কাজের অভিযোগে মোট ৫জন নারী-পুরুষকে আটক করা হয়। তাদের মধ্যে একজন তালহার ম্যানেজার।
তারা হলেন, মো. নুর আলী (৩৯), সুজন দাস (২৫), গেস্ট হাউজের ম্যানেজার মো. আলাউদ্দিন (৫০), রোশনা বেগম (২৬) ও সঞ্জিতা তাঁতী (২২)।
এর আগেরদিন বুধবার সিলেট মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম কর্মকর্তা অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) সাইফুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ওসমানী মেডিকেল কলেজ রোডের দুটি আবাসিক হোটেলে অভিাযান চালায় কোতোয়ালী থানাপুলিশের একটি দল। হোটেলগুলো হচ্ছে মা আবাসিক হোটেল ও চৌধুরী আবাসিক হোটেলে।
এ দুই হোটেল থেকে অনৈতিক কাজের অভিযোগ আটক করা হয় ৪ যুবক-যুবতীকে। তারা হলেন, শাহাব উদ্দিন (৩৮), মেহেদী হাসান মুকুল (৩২), লাকী বেগম (৩৫) ও আফসানা পারভীন (৩০)।
তারও আগে, গত ১৬ জুন মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ নগরীর দক্ষিণ সুরমার ঢাকা প্যালেস হোটেলে অভিযান চালিয়ে অনৈতিক কাজের অভিযোগে তিন যুবক ও দুই যুবতীকে আটক করে।
সিলেটের আবাসিক হোটেলগুলোতে আরও কঠোর নজরদারির মাধ্যমে এসব অনৈতিক কাজ প্রতিরোধে প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি সচেতন নাগরিকবৃন্দের।
আর পুলিশ প্রশাসন জানিয়েছে, পবিত্র এ মাটিতে এসব অনৈতিক কাজকর্ম প্রতিরোধে তারা সোচ্চার। অভিযান অব্যাহত থাকবে।