পরিবারের সবাইকে নিয়ে নিজের পৈত্রিক ভিটায় ঈদের আনন্দ উপভোগ করার কথা ছিল বিয়ানীবাজার উপজেলার কুড়ারবাজার ইউনিয়নের আঙ্গুরা মোহাম্মদপুর এলাকার বাসিন্দা হোসেন আহমেদ এর। নিজে কোরবানি দিতে না পারলেও আত্মীয়-স্বজন কিংবা এলাকার বিত্তবানদের দেওয়া মাংস রান্না করে ছেলে মেয়ে এবং নিজের স্ত্রী কে নিয়ে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিবেন। কিন্তু হঠাৎ করে উজান থেকে নেমে আসা ঢল আর বৃষ্টির পানিতে কুশিয়ারা নদীর ডাইক ভেঙ্গে বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে নিজের থাকার জায়গাটুকু। বর্তমানে তিনি পরিবারের সবাইকে নিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে থাকছেন। পানি নামা না পর্যন্ত এখানেই থাকতে হবে তার। শুধু হোসেন আহমেদ নয়, বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে বিয়ানীবাজার উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষের ঈদ আনন্দ। ক্ষতিগ্রস্ত এসব পরিবারের মুখে নেই ঈদের হাসি। তারা শুধু চান নিরাপদে তাদের নিজ ঠিকানায় আগের মতো ফিরে যেতে। এবারের বন্যায় মানুষের পৈত্রিক ভিটায় পানি উঠার পাশাপাশি মসজিদ-মাদ্রাসা, স্কুল, ফসলের ক্ষেত, রাস্তাঘাট, মাছের ফিসারি, হাট-বাজার তলিয়ে গেছে।
আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বিয়ানীবাজার উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ বন্যার কারণে পানিবন্ধি অবস্থায় জীবনযাপন করছেন। তবে আশার আলো হয়ে আজ বিয়ানীবাজারের আকাশে সূর্যের দেখা মিলেছে। এভাবে যদি দিন ভালো হয় তাহলে পানি নেমে যাবে খুব দ্রুত। মানুষ তাদের নিজস্ব বসত বাড়িতে যেতে পারবেন দ্রুত সময়ের মধ্যে।
সরেজমিনে সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার কুড়ারবাজার ইউনয়নের বৈরাগীবাজারের বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা যায় এখনো পানি কমেনি। কুশিয়ারা নদীর তীরে স্থানীয় বাজারের বেশ কয়েকটি দোকান পানিতে তলিয়ে গেছে। এছাড়াও বৃষ্টিতে প্রতিদিনই নতুন আতঙ্কে দিন যাপন করছেন কুশিয়ারা পাড়ের এসব মানুষ।
এ বিষয়ে বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা মুন্না বলেন, উপজেলার দশটি ইউনিয়নে ২২ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ করা হয়েছে। এছাড়া ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিদের বলা হয়েছে যাদের যত পরিমান ত্রাণ প্রয়োজন তা দেয়া হবে। এ ছাড়াও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়েছে। সার্বক্ষণিক তাদের খোঁজ নেওয়া হচ্ছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে।