মৌলভীবাজার কুলাউড়ার গর্ব, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নিউইয়র্ক পুলিশ কর্মকর্তা দিদারুল ইসলাম—যিনি কর্তব্যরত অবস্থায় এক বন্দুকধারীর হামলায় শহীদ হন—তাঁকে নিউইয়র্ক জানালো হৃদয়ভরা শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় চির বিদায়।
এমন বর্ণাঢ্য অন্তিম যাত্রা নিউইয়র্ক কখনও দেখেনি।
বৃহস্পতিবার ব্রঙ্কসের পার্কচেস্টারে আয়োজিত জানাজায় অংশ নিয়েছেন প্রায় ২০ হাজার মানুষ। ঝড়-বৃষ্টি, বন্যার সতর্কতা উপেক্ষা করে মানুষের এই ঢল ছিল ভালোবাসার শ্রেষ্ঠ প্রমাণ। নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগের প্রায় ৫ হাজার সদস্য সারিবদ্ধ হয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানান দিদারুলকে। তাঁদের চোখে জল, হৃদয়ে কৃতজ্ঞতা—এক নির্ভীক সহকর্মীর বিদায় বেলায়।
জানাজায় উপস্থিত ছিলেন নিউইয়র্কের গভর্নর, সিটি মেয়র, পুলিশ কমিশনার, আইনপ্রণেতারা, বিভিন্ন কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ ও আসন্ন নির্বাচনের মেয়র প্রার্থীরা। তাঁদের প্রতিটি বক্তব্যে প্রতিধ্বনিত হয়েছে দিদারুলের বীরত্ব, আত্মত্যাগ, এবং তাঁর শিকড়—বাংলাদেশের নাম।
নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগ (NYPD) দিদারুল ইসলামকে মরণোত্তর প্রথম শ্রেণির ডিটেকটিভ হিসেবে পদোন্নতি দিয়েছে। এই স্বীকৃতি শুধু তাঁর কর্মনিষ্ঠার সম্মান নয়, বরং প্রতীক হয়ে থাকলো প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির অবদানের।
পরিবার, সহকর্মী এবং প্রিয়জনের অশ্রুসিক্ত চোখের সামনে দিদারুলের দাফন সম্পন্ন হয় নিউ জার্সির লোরেল গ্রোভ কবরস্থানে। বাংলাদেশি অভিবাসীদের জন্য দিনটি ছিল একদিকে শোকাবহ, অন্যদিকে গর্বিত হওয়ার মুহূর্ত।
কুলাউড়ার সন্তান, নিউইয়র্কের বীর—দিদারুল ইসলাম
তিনি ছিলেন এক নিবেদিতপ্রাণ কর্মকর্তা, এক দায়িত্বশীল পিতা, এবং এক নির্ভীক বাঙালি। তাঁর এই আত্মত্যাগ ইতিহাসে লেখা থাকবে সাহস, সততা আর ভালোবাসার অমোঘ দৃষ্টান্ত হিসেবে।
বিদায় বীর সন্তান। তোমার জন্য কাঁদে নিউইয়র্ক, গর্বিত বাংলাদেশ।